নিয়াজ মাহমুদ জয়, ভোলা জেলা প্রতিনিধি:
ভোলার চরফ্যাশনে ভূমিদস্যু চক্রের কবলে পড়ে জমি ক্রয় করে দীর্ঘ ১৯ বছরেও জমির দলিল হাতে পায়নি নদীগর্ভে বিলীন হওয়া ৬৫ বছরের বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাক। জমি কিনে বিপাকে পড়েছে অসহায় পরিবারটি।
ভোলা চরফ্যাশন উপজেলার চর আইচা ৮ নং ওয়ার্ডের মৃত আব্দুল আজিজ সরদারের ছেলে আব্দুল মান্নান’ (৬০) বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আব্দুর রাজ্জাক জানান, চরফ্যাশন উপজেলার ১০১ নং চর আইচা মৌজার দিয়ারা ৩৭৬ নং খতিয়ানের ৯৬ শতাংশ জমি দাগ নং ১৯০, ১৯১, ৩১৯, ৩৮৮ দাগে ২০০৩ ইং সালে তৎকালীন ৮৪ হাজার টাকা বাজার মূল্যে ৯৬ শতাংশ জমি আব্দুল মান্নান সর্দার রাজ্জাক মুন্সীগংদের নিকট বিক্রয় করে টাকা গ্রহণ করেন। জমি বুঝিয়ে দিলে ওই জমিতে রাজ্জাক মুন্সিগং বাড়ী,ঘর, পুকুর, বাগান তৈরি করে বসবাস করে আসছিলো। কিন্তু ভূমিদস্যু আব্দুল মান্নান সর্দার জমি বিক্রয়ের সমস্ত টাকা নেওয়ার পরেও জমির দলিল দিতে নানা তালবাহানা শুরু করেন।
জমির দলিল না দেওয়ায় আব্দুর রাজ্জাক মন্সিগং মান্নান সর্দারের এর বিরুদ্ধে বিগত ২২/০১/২০১৪ ইং তারিখে চরফ্যাশন উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয় আওয়ামীলীগ সভাপতি শফিউল্লাহ হাওলাদারের নিকট দায়িত্ব অর্পণ করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। উক্ত ঘটনা সমাধানের জন্য অভিযুক্ত আব্দুল মান্নান সর্দারকে সালিশ বৈঠকের ডাকা হলেও তিনি কালক্ষেপণ করেন। পরবর্তীতে ০৮/০৩/২০১৪ ইং তারিখে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে দক্ষিণ আইচা বাজারে আওয়ামী লীগ সভাপতি সফিউল্লা হাওলাদার, ফারুক মাল, গিয়াস উদ্দিন, মোঃ জাফর আহমেদ, মোহাম্মদ ফারুক হাওলাদারের নেতৃত্বে সালিশ বৈঠকে সকল সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে মান্নান সর্দার টাকা নিয়ে দলিল না দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে আব্দুল মান্নান রাজ্জাক মুন্সীকে ৯৬ শতাংশ জমি দলিল দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সালিশগণের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে মান্নান সর্দার। পরবর্তীতে জমির দলিল না দিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। কিছুদিন পর এলাকায় এসে রাজ্জাক মুন্সির অসহায় পরিবারটিকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে হামলা ও নির্যাতন চালায় ভূমিদস্যু মান্নান সর্দার ও তার লোকজন।
বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব অবগত রয়েছেন। এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে সমাধানের নির্দেশ দিয়েছেন। তবুও কাউকে মানছে না মান্নান সর্দার।
চর মানিকা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিউল্লাহ হাওলাদার জানান, আব্দুল মান্নান সর্দার মিথ্যাবাদী, ভূমিদস্যু ও প্রতারক। সে এলাকায় বহু মানুষের সাথে জমি বেচা-কেনার নামে প্রতারণা করেছে। রাজ্জাক মুন্সির ছেলেদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জমির দলিল না দিয়ে ১৯ বছর ধরে তাল বাহানা করছে। ওই ঘটনাটি সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ্ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি অবগত আছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মান্নান সরদার জানান, রাজ্জাক মুন্সির বাড়ি নদী ভেঙ্গে যাওয়ার পর আমি আমার জায়গায় থাকতে দিয়েছি। তাদের কাছ থেকে কোনো টাকা-পয়সা আমি নেইনি।
বিষয়টি সমাধানের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন বৃদ্ধ রাজ্জাক মুন্সির পরিবার।