তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় অনুষ্ঠিত যাদুকাটা নদীর তীরে প্রাচীন এই ঐতিহ্যবাহী অদ্বৈত আচার্য প্রভুর পণার্তীথধামের মহাবারুণী মেলা- গঙ্গাস্নান ও হযরত শাহ আরেফিন (র:) এর ওরস উৎসব স্থলে লাখো পুণ্যার্থীদের ঢল নেমেছে।
প্রাচিন কাল থেকে শুরু হওয়া হিন্দু-মুসলমান দুই ধর্মের সাম্প্রতিক সম্প্রীতি মেলবন্ধনের ৩ দিনব্যাপী এই উৎসব ২৯ মার্চ মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ৩১ মার্চ শুক্রবার সকালে। প্রাচীন এই উৎসব চলবে ৩দিনব্যাপী। প্রতিবছর চৈত্র মাসে মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদেশী তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের মহা বিষ্ণুর অবতার শ্রীল অদ্বৈত আচার্য প্রভুর জন্মধাম লাউড় রাজ্যের নবগ্রাম রাজারগাঁও আখড়া বাড়ি সংলগ্ন যাদুকাটা নদীর তীরে স্থানীয় পুণ্যার্থী সহ দেশ-বিদেশের লাখ লাখ পুণ্যার্থীরা প্রার্থনা শেষে যাদুকাটা নদীর জলে পুণ্যস্নান করে তাদের জীবনের পাপ মুক্তি আর ভগবানের কৃপা লাভে। এবছর মহা-বারুণী মেলা গঙ্গাস্নানের মুখ্য সময় আজ ৩০ মার্চ বুধবার সকাল ৬ টা ৬ মিনিট ৯ সেকেন্ড থেকে ১১টা ২৩ মিনিট ৫ সেকেন্ডের মধ্যে মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদেশী তিথির শতভিষা নক্ষত্র। যারফলে সকাল থেকেই দেশ বিদেশের লাখ লাখ পুণ্যার্থীরা যাদুকাটা নদীর পূর্ব ও পশ্চিম তীরে সমবেত হয়ে গঙ্গাস্নানে ব্যস্ত থাকেন।
অপরদিকে একই সময়ে লাউড়েরগড় সীমান্তের যাদুকাটা নদীর উৎস্য মুখ ভারতের মেঘালয় সীমান্ত এলাকায় হযরত শাহ আরেফিন(র:) আস্তানায় মঙ্গলবার রাত থেকেই ওরস শরিফ শুরু হয়ে তা চলবো আগামী তিনদিন ৩১ মার্চ সকালে আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়ে। এ উৎসব দুটিকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে লাখ লাখ পুন্যার্থী ও ভক্তবৃন্দ, আশেখানরা কয়েকদিন পূর্ব থেকে এসে অদ্বৈত আচার্য প্রভুর জন্মধাম লাউড় রাজ্যের নবগ্রাম রাজারগাঁও আখড়া বাড়ি, নদীর পশ্চিম পাড় গরকাঠি ইস্কন মন্দির ও সৎসঙ্গ প্রার্থনা কেন্দ্র মন্দিরসহ ভিড় জমিয়েছেন যাদুকাটা নদীর তীর ও সংশ্লিষ্ট আশ পাশের গ্রামে।
অদ্বৈত আচার্য প্রভুর জন্মধাম রাজারগাও আখড়া বাড়ি সংস্কার ও গঙ্গাস্নান উদযাপন কমিটির সভাপতি ও তাহিরপুর উপজেলার জননন্দিত উপজেলা চেয়ারম্যান বাবু করুণা সিন্ধু চৌধুরীর বাবুল জানান,
মাহা-বারুণী মেলা গঙ্গাস্নান কেন্দ্র যাদুকাটার তীরে লাখো পুন্যার্থী ও ভক্তবৃন্দের সমাগম হয়েছে। মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথি এ সময়ের মধ্যে পুণ্যস্নান করবেন দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পুন্যার্থীরা।তিনি বলেন করোনা মহামারী কাটিয়ে দীর্ঘ দুই বৎসর পর লাখো লাখো জনতার আগমনে পুলকিত হয়েছে লাওর পর্গনা,আমরা সকলে মিলে দেশ বিদেশ থেকে আশা ভক্ত বৃন্দের নিরাপত্তা সহ সকল দরনের সুযোগ সুবিদা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। আমি জেলা প্রশাসন সহ সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি তারা সকলের নিরাপত্তার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। আমি উপজেলা পরিষদের পক্ষথেকে আগত ভক্তবৃন্দ দের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
হযরত শাহ আরেফিন (র:) মোকাম ও ওরস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব তাহিরপুর উপজেলা প্রেসক্লাব সাধারন সম্পাদক আলম সাব্বির জানান, মুসলিম ও হিন্দু এই দুই ধর্মের দুই আধ্যাত্মিক সাধক শাহ আরেফিন (র:) ওরস ও অদ্বৈত আর্চাযর গঙ্গাস্নান কে কেন্দ্র করে ধর্মীয় সম্প্রীতির মিলনমেলা প্রাচীন কাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়েছে আসছে। এখানে কেউ এসেছেন অস্তি নিয়ে, কেউ পুণ্যের আশায়, আবার কেউ আসেন মানত নিয়ে মনোবাসনার ইচ্ছে পূরণ করায়।