তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
টাঙ্গুয়ার হাওরের পাশে এরালিয়া কোনা হাওরের বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করছে। তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরসংলগ্ন এরালিয়াকোনা হাওরের বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ২০০ একর জমির বোরো ধান। সপ্তাহ ধরে উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে অস্বাভাবিকভাবে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় আজ শুক্রবার সকাল থেকে এরালিয়াকোনা হাওরে পানি প্রবেশ করতে থাকে। এতে কিছু সময়ের মধ্যেই তলিয়ে যায় ২০০ একর জমির বোরো ধান।
তবে ভেঙে যাওয়া বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন কোনো প্রকল্প নয়। এটি এরালিয়াকোনা হাওরের স্থানীয় কৃষকদের উদ্যোগে নির্মিত বাঁধ।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান কবির এরালিয়াকোনা হাওরের বাঁধটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় বাঁশ, বস্তা ও বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে গেলেও বাঁধটি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে রায়হান কবির জানান, এরালিয়াকোনা হাওরে পানি প্রবেশ করছে এমন খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক বাঁশ ও বস্তা নিয়ে হাজির হলেও পানির অতিরিক্ত চাপ থাকায় বাঁধটি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে মন্দিয়াতা গ্রামের কৃষক ও ইউপি সদস্য সাজিনুর মিয়া জানান, টাঙ্গুয়া হাওরসংলগ্ন গনিয়াকুড়ি, এরালিয়াকোনা, নান্দিয়া, লামারগুল, টানেরগুল, রাঙ্গামাটিয়া, ফলিয়ার বিল, সন্ন্যাসীসহ ছোট ছোট আটটি হাওর রয়েছে। এসব হাওরের ফসল রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প নেই। এই হাওরগুলো রক্ষায় স্থানীয় কৃষকদের উদ্যোগেই বাঁধ নির্মাণের কাজ করা হয়।
এরালিয়াকোনা হাওরের কৃষক আব্দুল ওয়াহিদ জানান, ‘আমার সারা বছর চলার একমাত্র মাধ্যম এই হাওরের বোরো ধান। আজ শুক্রবার সকালে নিমেষেই আমার জমির ধান পানিতে তলিয়ে যায়।’
হাওরতীরবর্তী তেরঘর গ্রামের কৃষক গোলাপ নুর জানান, চলতি বছর এরালিয়াকোনা হাওরের প্রায় ২০০ একর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ হয়েছিল। হাওরটি তলিয়ে যাওয়ায় শতাধিক কৃষক সারা বছরের জীবিকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
টাঙ্গুয়ার হাওর ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহমেদ কবির জানান, টাঙ্গুয়ার হাওরসংশ্লিষ্ট কয়েকটি হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো প্রকল্প নেই। এ জন্যই হাওরগুলো অরক্ষিত থাকে এবং পানি বৃদ্ধি পেলেই হাওরগুলো তলিয়ে যায়।