সারাদেশে

বিদ্যুৎ সংকটে কুড়িগ্রাম, অতিরিক্ত ভাড়ায় চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা

সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম।।  | ২৮ এপ্রিল কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের বহু এলাকা। টানা দুই দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও স্বাভাবিক হয়নি বিদ্যুৎ সরবরাহ। ফলে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছেন কিছু অটোরিকশা ও মিশুকচালক। তারা সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ বা তারও বেশি ভাড়া আদায় করছেন। ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানান, যেখানে স্বাভাবিক সময়ে ভাড়া ছিল ১৫-২০ টাকা, সেখানে এখন গুনতে হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত। জরুরি প্রয়োজনে গন্তব্যে পৌঁছাতে গিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। কুড়িগ্রাম থেকে আসা ইয়াছিন আরাফাত নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, “গতকাল আমাদের অনার্স ৩য় বর্ষের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে কলেজ গেটে এসে দেখি মাত্র কয়েকটি অটো দাঁড়িয়ে আছে। এক চালক জানান, জনপ্রতি ৪০ টাকা ভাড়া লাগবে, যেখানে নিয়মিত ভাড়া মাত্র ১৫ টাকা। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই যেতে হয়েছে।” একই অভিজ্ঞতার কথা জানান রফিকুল ইসলাম নামে আরেক যাত্রী। তিনি বলেন, “সকালে জরুরি প্রয়োজনে কুড়িগ্রাম এসেছিলাম। তখনও অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয়েছিল। এখন বাসায় ফিরতেও একই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি।” আরেক শিক্ষার্থী পারভেজ বলেন, “প্রতিবার বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলেই চালকরা ভাড়া বাড়িয়ে দেন। অতিরিক্ত ভাড়া না দিলে কেউ আমাদের গন্তব্যে নিয়ে যেতে রাজি হন না। এটা শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে।” এ বিষয়ে অটো চালকদের একাংশের বক্তব্যও রয়েছে। জিয়া নামের এক অটোচালক বলেন, “কাল থেকে কারেন্ট নাই। অল্প একটু চার্জ আছে। আমরা কী করবো? পরিবার তো চালাতে হবে। তাই ৫/১০ টাকা বাড়তি ভাড়া নেই। তবে একেবারে অতিরিক্ত নিচ্ছি না।” এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অজুহাত দেখিয়ে কিছু চালক ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছেন, অথচ তাদের এ ধরনের সিদ্ধান্তের কোনো সরকারি অনুমোদন নেই। সচেতন নাগরিকরা বলছেন, সংকটের সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। অথচ কিছু চালক ভাড়া বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়াচ্ছেন, যা মানবিকতার পরিপন্থী। তারা জেলা প্রশাসনের কাছে দ্রুত হস্তক্ষেপ ও কঠোর নজরদারির দাবি জানিয়েছেন, যাতে সাধারণ মানুষ ন্যায্য ভাড়ায় চলাচল করতে পারে।

0 Shares

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *