এস.এম.বিপু রায়হান,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ ও কাজিপুর পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১২ সে.মি এবং কাজিপুর পয়েন্টে ২২ সে. মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে কাজিপুর চরাঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নের অধিকাংশ ফসলী জমি ও অনেক বসতভিটায় পানিতে তলিয়ে গেছে। সদর উপজেলার কাওয়াকোলা, মেছড়া ও সয়দাবাদ ইউনিয়নের সকল ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
কিছুকিছু বাড়ীতে ইতোমধ্যে পানি প্রবেশ করেছে।
এসব এলাকার বসতবাড়ীর চারপাশে পানি থাকায় সকলেই পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সিরাজগঞ্জ পৌরসভার খোকশাবাড়ী ও মালসাপাড়া কাটাওয়াপদা, চরমিরপুর এলাকার অনেক বসতবাড়ীতে পানিতে ওঠায় সকলেই ওয়াপদাবাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। এসব পরিবারের মধ্যে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
ল্যাট্টিন না থাকায় প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতেও নানা সমস্যা হচ্ছে। অন্যদিকে পানি বাড়ায় বেলকুচি, চৌহালী, এনায়েতপুর, শাহজাদপুরের যমুনার অরক্ষিত অঞ্চলে তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। শাহজাদপুরের পাঁচিল ও চৌহালীর বাঘুটিয়া এলাকায় গত ২৪ ঘন্টায় অন্তত ১৫টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এছাড়াও শাহজাদপুরের রাওতারা বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তৃন এলাকায় প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
এদিকে, ভ্যন্তরীন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চলনবিলাঞ্চলেও নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যাকবলিতদের মধ্যে ইতোমধ্যে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট দেখা দিতে শুরু করেছে। যারা ঘরবাড়ী ছেড়ে ওয়াপধা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে তাদের সংকট আরো চরম আকারে ধারন করছে।
কাওয়াকোলা ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক জানান, চরাঞ্চলের প্রতিটি বাড়ীর চারপাশে পানি থৈথৈ করছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে।
আগামীকালের মধ্যেই বসতভিটায় পানি ওঠতে শুরু করবে। জমি-জমা তলিয়ে যাওয়ায় ফসলের চরম ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। চরাঞ্চলের মানুষ বন্যা আতঙ্কে ভুগছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন জানান, ২৪ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত পানি বাড়তে পারে। বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। তিনি জানান, পানি বাড়ায় কিছু কিছু পয়েন্টে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৪০ হাজার জিওব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আরো প্রায় ৩০ হাজার ব্যাগ মোতায়েন রয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান জানান, ইতোমধ্যে ৯১১ মে.টন চাল ও নগদ ২০ লক্ষ টাকা এবং ৪ হাজার শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বন্যা কবলিত উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে বিতরন করা হবে।