
গলদা রেণু ধরার নামে নদীর জীববৈচিত্র্য ধ্বংস:

ভোলায় চলছে নিধনযজ্ঞ মোঃ মহিউদ্দিন ভোলা জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ, যার চারপাশজুড়ে রয়েছে নদী, সাগর ও খালবিল। বর্ষাকালে এসব জলাশয় হয়ে ওঠে মাছ ও জলজ প্রাণীর প্রজননের আদর্শ স্থান। নদীর স্বাভাবিক স্রোতে প্রচুর রেনুপোনা জন্ম নেয়—এদের মধ্যে গলদা চিংড়ির রেণুপোনাও রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, কিছু অসাধু জেলে গোষ্ঠী এসব গলদা রেণু আহরণের নামে নদীর ছোট ছোট জীববৈচিত্র্যকে ধ্বংস করছে। তারা ছোট ছোট ‘হাতজাল’ বা ‘মশারি জাল’ ব্যবহার করে পানি ঠেলে ঠেলে এই পোনা সংগ্রহ করে। অথচ প্রতি কাপে গলদা চিংড়ির রেণু পড়লেও, সেই জালে ধরা পড়ে অসংখ্য অন্যান্য পোনা মাছ, কাঁকড়ার বাচ্চা, শৈবাল, প্ল্যাঙ্কটনসহ ক্ষুদ্র প্রাণী—যেগুলো নদীর খাদ্য চক্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি দুইটি গলদা রেণু সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রতি ক্ষেপে লক্ষ লক্ষ জলজ প্রাণী মেরে ফেলা হচ্ছে। এসব রেণু ও ক্ষুদ্র প্রাণী নদী ও সাগরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কিন্তু এই বেপরোয়া আহরণের ফলে নদীর খাদ্য চক্র ভেঙে পড়ছে এবং ভবিষ্যতে মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে চলতে থাকলে নদী-সাগরের স্বাভাবিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। নদী ও সাগরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অবিলম্বে এই অনিয়ন্ত্রিত রেণু আহরণ বন্ধ করা জরুরি। তা না হলে শুধু ভোলাই নয়, পুরো দেশের সামুদ্রিক ও নদীমাতৃক পরিবেশ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।