আনোয়ার হোসেন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মেঘনা নদীর বুক চিরে পলি বিধৌত অঞ্চল রামগতি, কমলনগর উপজেলা। রামগতি উপজেলায় ৮ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং কমলনগর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন সহ এ দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত জাতীয় সংসদের আসন নং-২৭৭। লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি, কমলনগর) আসনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীগণ এখনি শুরু করেছেন শো-ডাউন ও দৌড়ঝাঁপ। নির্বাচনী হাওয়ায় ক্ষমতাসীন দল কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বর্তমান মহাজোটের প্রার্থী নৌকা প্রতিকে নির্বাচিত বিকল্পধারা মহা সচিব মেজর (অব:) আবদুল মান্নান এর একটি গ্রুপ, সাবেক এমপি মো: আবদুল্যাহর রয়েছে আরেকটি গ্রুপ ও আওয়ামীলীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলীর নেতৃত্বে রয়েছে আরেকটি গ্রুপ। আবার মহানগর যুবলীগের নেতা তাসভিরুল হক অনুর রয়েছে তৃণমূলে বিপুল জনপ্রিয়তা। এ চার গ্রপেরই রয়েছে এলাকায় শক্ত অবস্থান। এ মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জানান দিচ্ছেন তাদের প্রার্থীতা। সম্প্রতি ক্ষমতাসীন দলের দুই মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি আবদুল্যাহ আল মামুন ও কেন্দ্রীয় নেত্রী ফরিদুন্নাহার লাইলী করেছেন বিশাল গাড়ী বহরের মোটর শোডাউন। ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন- আ’লীগের সাবেক সাংসদ বড়খেরী ইউনিয়নের অধিবাসী আবদুল্যাহ আল মামুন, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী। তার বাড়ী নোয়াখালী জেলার খলিফার হাট ইউনিয়নে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর দক্ষিন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রামগতির আলেকজান্ডার ইউনিয়নের সাবেক অধিবাসী আলহাজ এডভোকেট মো: তাসভিরুল হক অনু। এছাড়া দলীয় মনোনয়ন ফরম ক্রয়ের কথা শুনা যাচ্ছে আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য ও চর রমিজ ইউনিয়নের রাশিয়া বাড়ীর আবদুজ জাহের সাজু, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ইস্কান্দার মির্জা শামীম। তিনি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের অধিবাসী। এ ছাড়া প্রার্থীতা করার কথা শুনা যায় মহাজোটের শরিক বিকল্প ধারা বাংলাদেশের মহাসচিব বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর (অব:) আবদুল মান্নান। কেন্দ্রীয় এ নেতা ১৯৪২ সালে নোয়াখালী জেলার সাবেক রামগতি বর্তমান কমলনগর উপজেলার চর কাদিরা ইউনিয়নে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম মো: ইসহাক মিয়া। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এ আসনে তাদের প্রার্থীর স্বপক্ষে পোষ্টার লিফলেট ও প্রচার প্রচারণা করতে দেখা যায়। দলীয় প্রার্থী হিসেবে মাঠে কাজ করছেন লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের আমীর রামগতি পৌর ৫নং ওয়ার্ডের অধিবাসী এ আর হাফিজ উল্যাহ। বিএনপি দলীয় প্রার্থী হিসেবে মাঠে কাজ করছেন এ আসনের বিএনপির দলীয় প্রতিকে নির্বাচিত সাবেক সাংসদ ও রামগতির চর আলগী ইউনিয়নের অধিবাসী এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান। তিনি চর আলগী ইউনিয়নের আবদুল হাদি মিয়ার সন্তান। এছাড়া বিএনপির আরেকটি গ্রুপ রয়েছে সাবেক রামগতি সভাপতি শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক আবি আবদুল্যাহর নেতৃত্বে রয়েছে পদ বঞ্চিত নেতা কর্মীদের আরেকটি শক্তিশালী গ্রুপ। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রোগ্রাম করে জানান দিচ্ছে তাদের অবস্থান। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেল পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়বেন বলে তিনি জানান। এ দিকে ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে গতবার নির্বাচন করা স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক, সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা ও জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব রয়েছেন এ আসনের হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে। ১৯৪৫ সালে তার জন্ম হয় নোয়াখালী জেলার রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা গ্রামে। তার পিতার নাম আলী আজম। দলীয় অবস্থান ক্ষীণ হলেও বিএনপি জোটের প্রার্থী হিসেবে তিনি রয়েছেন অগ্রগণ্য হিসেবে। ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণায় দেখা যায় কমলনগর উপজেলার চর কাদিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল্লামা খালেদ সাইফুল্যাহকে। তিনি এর আগেও সংসদ সদস্য পদে হাতপাখা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। তিনি ইশা’র প্রতিষ্ঠাতা হাফেজ্জী হুজুরের জামাতা।