আতাউর রহমান তুহিন, কয়রা উপজেলা প্রতিনিধি:
সুন্দরবন উপকূলের জনপদ কয়রা উপজেলায় জনবান্ধন সেবায় বদলে গেল উপজেলা ভূমি অফিস।বর্তমান সময়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় সেবা প্রত্যাশীদের, অফিসে কর্মকর্তাদের দেখা মিললেও একটা কথার জায়গায় দুইটা কথা বলা যায় না।ভূমি সেবা নিয়ে মানুষের দুর্ভোগ দীর্ঘদিনের।সেখানে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী কয়রা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বি.এম তারিক উজ জামান।তাঁর নানামুখী পদক্ষেপের ফলে ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের কাছে কয়রা উপজেলা ভূমি অফিস একটি জনবান্ধব অফিসে পরিণত হয়েছে।উপজেলা ভূমি অফিসকে অনিয়ম,দুর্নীতি প্রতিরোধের পাশাপাশি ভূমি সংক্রান্ত সেবা সহজ করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বি.এম তারিক উজ জামান কাজে যোগদানে পর থেকেই ভূমি কর্মকর্তাদের সঙ্গে জনগণের দূরত্ব কমেছে। জনগণের ভোগান্তি লাগবে সেবার সবকিছু এখন অনলাইনে। উপজেলা ভূমি অফিসে কোন আর্থিক লেনদেনের সুযোগ নেই। বর্তমান সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি ব্যবস্থা শতভাগ অনলাইন আপডেট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে, ভূমি সংক্রান্ত কাগজপত্র অনলাইনে আপলোড, বাদি-বিবাদীর সরাসরি শুনানি আর দ্রুততম সময়ের মধ্যে জমির নামজারিসহ নানামুখী সেবায় পাল্টে গেছে কয়রা উপজেলা ভূমি অফিস।সেবা নিতে নেই আগের মতো তৃতীয় পক্ষ কিংবা দালালের দৌরাত্ম। কোনো হয়রানি ছাড়াই মিলছে জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। ভূমি অফিসের নানামুখী সেবা পেয়ে খুশি সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। যারা এক সময় তৃতীয়পক্ষের সহায়তা ছাড়া জমির কোনো কাজই করতে পারতেন না, তাঁরাই এখন নিজের সমস্যার কথা নিজেরাই ভূমি অফিসে এসে বলতে পারছেন এনিল্যান্ড কে।
সরেজমিন কয়রা ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়,এসিল্যান্ড অফিসে বসে আছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশ থেকে বাইশ জন সেবা প্রার্থী। সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিজেই প্রত্যেকের সঙ্গে তাদের সমস্যা নিয়ে কথা বলছেন। দিচ্ছেন সমাধানও।জনগণের দোড়গোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিজ অফিস রুমে প্রতি সপ্তাহের গণশুনানি করেন।
উপজেলার সাধারণ মানুষেরা জানান, ‘বর্তমান এসিল্যান্ডের সৃজনশীল কাজ করার মানসিকতা আছে বলেই জনগণ সেবা পাচ্ছে। মূলত এ কারণেই ভূমি অফিসের সেবার মান পরিবর্তন হয়েছে। সেবাপ্রার্থীরা জানান, বর্তমান সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসার পর থেকে মানুষের দোড়গোড়ায় ভূমি সেবা পৌঁছে দিতে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। যেকোনো মানুষ যেকোনো সময় সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে কথা বলতে পারছেন।
সেবা গ্রহীতা কয়রা সদরের গোবরা গ্রামের মো.হাফিজুর রহমান বলেন, আমি সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহোদয়ের সেবা ও আচরণে অত্যন্ত সন্তুষ্ট।একজন কর্মকর্তা আমার সাথে এত সময় দিয়ে সুন্দর ভাবে কথা বলবেন তা আগে ভাবেনি।তিনি সব কথা শুনলেন এবং পরামর্শ দিলেন। এসিল্যান্ড সাহেব অনেক ভালো মানুষ।খুব ভালো লাগছে। উনার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করছি।
ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সেলিম হোসেন বলেন, অতিরিক্ত টাকা-পয়সা দেওয়া লাগে না। সরকারি খরচ যা তাই দিতে হচ্ছে।হয়রানি ছাড়াই সব কাজ করে দিয়েছে।
কয়রা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বি.এম তারিক উজ জামান বলেন,জনবান্ধব জনসেবা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। একজন মানুষও যাতে ভোগান্তির স্বীকার না হয় সেজন্য ভূমি অফিসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তৎপর রয়েছে। আমরা সবসময়ই চেষ্টা করি সর্বোচ্চ সেবা দিতে।
তিনি আরও বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন,বাজার মনিটরিং, খাদ্যে ভেজাল বন্ধে ব্যবস্থা,ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচলনা,অপরিছন্ন হোটেল, প্রতারকদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।