আসাদুজ্জামান সনেট,:কালীগঞ্জ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে তালিকায় নাম থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিলের ঢেউটিন না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ঋতু তার এলাকার দুটি হতদরিদ্র পরিবারকে ঢেউটিন না দিয়ে তার পছন্দের লোকদের বিতরণ করেছেন বলে অভিযোগ।
জানা যায়, গেলো আম্ফান ঝড়ের সময়ে ওই ইউনিয়নের বেশ কিছু মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সে সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হতদরিদ্রদের জন্য ঢেউটিন বরাদ্ধ আসে। কিন্তু চেয়ারম্যান ঋতু তালিকায় অন্তভূক্তদের মধ্যে ঢেউটিন না দিয়ে পছন্দের ব্যাক্তিদের মাঝে বিতরণ করেন। এছাড়াও টিন বিতরনের সময়ে হতদরিদ্রদের প্রাপ্য টিনের থেকে ২ পিচ করে কম দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের ধলা দাদপুর গ্রামের জহর আলী মন্ডলের ছেলে বাবলু মন্ডল ও দাদপুর গ্রামের আব্দুর রহমান খানের ছেলে মহাম্মদ আলীর নাম তালিকায় থাকলেও তারা ঢেউটিন পাননি।
এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে টিন বিতরনের আগে ওই চেয়ারম্যানের ভাই কোরবান আলী অফিস খরচের কথা বলে অনেকের কাছে পাঁচ হাজার করে টাকা চেয়েছিল। কিন্তু ওই টাকা না দিতে পারায় তাদের ভাগ্যে টিন জোটেনি। কালীগঞ্জ উপজেলা পিআইও অফিস সুত্রে জানা গেছে, গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের ভূমিহীন ও গৃহহীন অসহায় ৩০ টি পরিবারের জন্য দুই বান করে ঢেউটিন বরাদ্ধ দেওয়া হয়। সেই সাথেই তাদের ঘর বাধা মেরামত খরচের জন্য বান প্রতি ৩ হাজার টাকার চেক দেওয়ান হয় দুই বানে ১৬ পিচ টিনে ছয় হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়। কিন্তু ওই টিন এবং টাকার চেক বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম সহ স্বজনপ্রীতি করা হয়েছে বলে ভূক্তভোগিদের অভিযোগ। ওই ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা তিরমহনী পূর্বপাড়ার মৃত কর্ণ দাসের স্ত্রী রেখা রানী, একই এলাকার সন্ন্যাসী দাসের ছেলে মিলন দাস ও লাল মিয়ার ছেলে ফারুক হোসেন জানান, তাদের দুই বান অর্থাৎ ১৬ পিচ করে টিন দেওয়ার কথা।
কিন্তু দুই পিচ টিন কম দিয়ে ১৪ পিচ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সরকারি ভাবে ডেউটিনের সাথে ঘর মেরামতের জন্য ৬ হাজার টাকার চেক দিলেও চেয়ারম্যানের ভাই কোরবান আলী তা নিয়ে নেয়। দাদপুর গ্রামের হতদরিদ্র আলী কদর বলেন, ওই চেকের খরচের টাকা না পাওয়াতে এখনো তার ঘরে টিন ছাউনি দিতে পারেননি। তারমত আরও অনেকের নিকট থেকেই কোরবান আলী চেক নিয়েছেন বলে অভিযোগ।উল্লেখ্য, গত ৩/৪ মাস আগে ওই চেয়ারম্যানের বাড়িতে মিললো সরকারি ত্রানের ঢেউটিন নিয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়েছিল। এ নিয়ে চেক ও খরচের টাকা চাওয়ার বিষয়টি জানতে কোরবান আলীর সাথে কথা বললে তিনি সাংবাদিকদের জানান, তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগগুলি সত্য নহে।
টিন বিতরনে অনিয়মের বিষয়গুলি জানতে চাইলে চেয়ারম্যান ঋতু সাংবাদিকদের জানান, এসব এক বছর আগের কথা, এখন কেন আবার উঠে আসছে। তবে, টিন কম দেবার বিষয়টি অস্বিকার করে তিনি নিজ হাতেই সবাইকে টিন বুঝিয়ে দিয়েছেন বলে দাবী করেন। আর চেকের বিষয়ে বলেন, যারা টিন পাইনি তারাই মিথ্যা কথা ছড়াচ্ছে। উল্লেখ্য, দেশের মধ্যে একমাত্র তৃতীয় লিঙ্গের ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ঋতুর বেশ কিছুদিন দিন আগে ইযাবা সেবনের একটি ভিডিও সামাজি যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। এতে ওই ইউনিয়ন পরিষদের অন্যান্য নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে। দৃষ্টিকটু এমন বিষয়টি উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির গত সভাতে উত্থাপিত হওয়াতে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন হয়।