

প্রতিনিধি, পঞ্চগড় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় মিলের গোডাউন থেকে জব্দ করা ৪৫ টন চাল নিয়ে রহস্যের জাল ঘনীভূত হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন বলছে, এ চাল এসেছে ঠাকুরগাঁও সদর এলএসডি (লোকাল সাপ্লাই ডিপো) থেকে। কারণ জব্দ করা প্রতিটি বস্তায় ঠাকুরগাঁও সদর এলএসডির স্ট্যাম্প সিল রয়েছে। জানা যায়, গত ১৪ জুন তেঁতুলিয়ার আজিজনগড় এলাকার ভাই ভাই হাস্কিং মিলে অভিযান চালিয়ে এই চাল জব্দ করা হয়। পরদিন ১৫ জুন তেঁতুলিয়া খাদ্য গুদামের পরিদর্শক রুবেল আলম বাদী হয়ে হাস্কিং মিলের পরিচালক শহিদুল ইসলাম ও ম্যানেজার সাদেকের বিরুদ্ধে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে চাল জব্দের দুই মাস পার হলেও মালিকানা ও সংশ্লিষ্টতা এখনো নির্ধারণ হয়নি। এতে জনমনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, অবৈধভাবে সরকারি চাল পাচারকারীরা কি শেষ পর্যন্ত পার পেয়ে যাবে? মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেঁতুলিয়া মডেল থানার পরিদর্শক নজির হোসেন বলেন, তদন্তের স্বার্থে এখনই বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। তবে বস্তাগুলোতে ঠাকুরগাঁও সদর এলএসডির সিল স্পষ্ট দেখা গেছে। অন্যদিকে ঠাকুরগাঁও সদর এলএসডির ওসি আসাদুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তেঁতুলিয়ায় জব্দকৃত চালের সঙ্গে আমার গুদামের কোনো সম্পর্ক নেই। আমার গুদাম থেকে যে চাল দেওয়া হয়েছে, তা রাজধানীর একটি গুদামে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাই ভাই হাস্কিং মিলের পরিচালক শহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, তিনি করিম নামের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় এই চাল কিনেছেন। তিনি দাবি করেন, আমি জানতাম না এগুলো সরকারি চাল। এদিকে কুষ্টিয়া ট্রেডিং এজেন্সির প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম জানান, তাদের প্রতিষ্ঠান ঠাকুরগাঁও থেকে চাল নিয়ে ঢাকার তেজগাঁও সিএসডিতে পৌঁছে দিয়েছে। তেঁতুলিয়ার ঘটনায় তাঁদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহিন বলেন, বস্তার গায়ে সরকারি গুদামের সিল থাকায় চালগুলো সরকারি বলেই জব্দ করেছি। আপাতত মনে হচ্ছে চালগুলো ঠাকুরগাঁও সদর এলএসডি থেকে এসেছে। ঠাকুরগাঁও জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মাহামুদুল হাসান বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদারকি করছে। ব্যক্তিগতভাবে মন্তব্য করার সুযোগ নেই। উল্লেখ্য, ১২ জুন ঠাকুরগাঁও সদর খাদ্য গুদাম থেকে দুটি ট্রাকে (ঢাকা মেট্রো-ট ২০৬৭৬০ ও ঢাকা মেট্রো-ট ২০৬৭৬১) ৪৫ টন চাল ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু ১৪ জুন সেই চাল তেঁতুলিয়ার ভাই ভাই হাস্কিং মিলে মজুত অবস্থায় জব্দ করে উপজেলা প্রশাসন।