ঠাকুরগাঁও শহর ও বাণিজ্যিক এলাকার অনেক রোজাদাররা খাবারের অভাবে সেহেরি খেতে পারেনি বলে জানা গেছে। এতে করে ধর্মপ্রাণ কিছু মুসলিম শুধুমাত্র পানি খেয়ে রোজা রেখেছে। কিন্তু পরিস্থিতির শিকার বড় একটি অংশই রোজা রাখতে পারেনি।
ঠাকুরগাঁও জেলা জুড়ে চলমান হোটেল-রেঁস্তোরা-
বেকারির শ্রমিক ও মালিকদের ডাকা ধর্মঘট ঘিরে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিক সমিতির উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় তারা হোটেলের জরিমানা বাতিল ও শ্রমিকদের মুক্তি দাবি করেন। ব্যবসা সহ বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরের জেলা থেকে মানুষেরা আসে ঠাকুরগাঁও জেলায়। এদের মধ্যে রোজাদারদের বড় অংশই সেহেরির জন্যে হোটেলের উপর নির্ভর করে।
এছাড়াও শহরস্থ অনেক স্থায়ী অস্থায়ী বসবাসকারীরাও সেহেরির জন্যে হোটেল বা রেঁস্তোরার উপর নির্ভর করে। তবে আগেরদিন রাতে হঠাৎ হোটেল শ্রমিক ও মালিকদের ডাকা ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েছে এ সকল মানুষ। অসুস্থ ভাইকে নিয়ে পাশের উপজেলা থেকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন আ. জব্বার। তিনি জানান, হাসপাতালে কোনো ক্যান্টিন নেই। এখানে সেহেরির সময় খাবারও দেয় না। রোগী নিয়ে হাসপাতালে অবস্থান করা আমার মতো প্রায় ৪০০ স্বজন সেহেরির জন্যে হোটেলের উপর নির্ভরশীল। ধর্মঘটের কারণে কেউ সেহেরি খেতে পারেনি।
বগুড়া থেকে আসা কাঁচামাল ব্যবসায়ী রাজ্জাক বলেন, সেহেরির সময় অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। কোনো হোটেল খোলা পাইনি। ব্যবসার কাজে আসা কাঁচামাল আড়তের সবাই একই ভোগান্তিতে পড়েছে।
এদিকে দুই হোটেল শ্রমিকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁও জেলা হোটেল ও বেকারি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জয়নাল আবেদিন।
সমস্যা সমাধানে প্রশাসন কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান। তবে শ্রমিকদের দাবি অযৌক্তিক বলে জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩’ এর অধীন ‘বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত’ পরিচালনা করেন ঠাকুরগাঁও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিত্যানন্দ সরকার।
উক্ত আইনের তফসিল এ বর্ণিত ৩৪ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শহরের চৌরাস্তার হোটেল গোওসিয়া ও হোটেল রোজের ম্যানেজারদের প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাতেই কর্মবিরতির ঘোষণা করে জেলার সকল হোটেল, রেঁস্তোরা ও বেকারি শ্রমিকরা। তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে মালিক সমিতিও হোটেল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।