গাজীপুরে ফিডস ম্যানেজার রফিকুল হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামীকে গ্রেফতার করল পিবিআই


মোঃ শরীফুল আজম বাবু – বিশেষ প্রতিনিধি গাজীপুরে ফিডসের সিনিয়র ম্যানেজার রফিকুল হত্যা মুল রহস্য উদঘাটন ও মূল আসামীকে গ্রেফতার করল পিবিআই। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন ১। মোঃ নয়ন (২১), পিতা-মৃত খলিল শেখ, মাতা-লিলি বেগম, স্ত্রী-মাছুমা আক্তার, সাং-জরুন নগর, ৮নং ওয়ার্ড, থানা-সদর, জেলা-বগুড়া, এ/পি. বড়বাড়ী চুনের খোলা (সিরাজ @ সেরা মাদবরের বাড়ীর ভাড়াটিয়া), চান্দরা রোড, থানা-গাছা, জিএমপি, গাজীপুর, (ভাসমান), ২। মোঃ আল আমিন (১৯), পিতা-মোঃ এরশাদ আলী, মাতা-আসমা বেগম, দাদা-শাহ জামাল, দাদী-হাসিনা, সাং-মানিকদার চর, (মানিকদের বাজারের দক্ষিন পার্শে), পোঃ-টেংরাকুরা থানা-সারিয়াকান্দি, জেলা-বগুড়া, নানার বাড়ীর ঠিকানা/সাং-জাগির মির্জাপুর, ডাকঘর-পিয়ারপুর, থানা-জামালপুর সদর, জেলা-জামালপুর, এ/পি. চুনের খোলা (মজিবরের বাড়ীর ভাড়াটিয়া), চান্দরা রোড, থানা-গাছা, জিএমপি, গাজীপুর (ভাসমান) (উল্লেখ্য আসামী মোঃ আল আমিন এর মাতা পূর্বে নূর হোসেন, সাং-পলিশা, থানা-মাদরগঞ্জ, জেলা-জামালপুরের সাথে বিবাহ হয়েছিল) দ্বয়কে জিএমপি, গাজীপুর এর গাছা থানাধীন কুনিয়া মোতালেব মার্কেট এলাকা থেকে ইং ২২/০৭/২০২৫ তারিখ রাত ০১.৩০ ঘটিকার সময় গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী থানাধীন আমবাগ আতাউর মার্কেট সাকিনস্থ মাসুদ এর পাঁচতলা ভাড়া বাড়ীর চার তলার পূর্ব পাশের মাঝের রুমে বাদীর বাবা ডিসিস্ট মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম (৪৮) প্রায় ৬/৭ বছর যাবত স্বপরিবারে বর্তমান ঠিকানায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে গাজীপুর ফিডস ‘লিমিটেডে সিনিয়র ম্যানেজার হিসাবে চাকুরি করে। গত ইং-২৭/০৫/২০২৫ তারিখ ঘর-বাড়ী নির্মাণের জন্য ডিসিস্টকে বাসায় রেখে বাদীর মাকে নিয়ে গ্রামের বাড়ী টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী থানাধীন ফুলবাড়ী গ্রামে যায়। অতঃপর গত ইং ২০/০৭/২০২৫ তারিখ সকাল আনুমানিক ০৯.০০ ঘটিকার সময় বাদী ডিসিস্ট কে মোবাইলে না পেয়ে সকাল আনুমানিক ১১.০০ ঘটিকার সময় বাদী তার দুই বন্ধু ও ডিসিস্টের সহকর্মীদের ফোন করে তাদের বাসায় যেতে বললে তারা ঐ দিন দুপুর আনুমানিক ১২.৩০ ঘটিকার সময় বাদীর বাসায় গিয়ে রুমের বাহির থেকে দরজায় তালা দেয়া দেখে ও বাড়ীর মালিকের উপস্থিতিতে বাসার দরজার তালা ভেঙ্গে রুমের ভেতর ডিসিস্টকে গুরুতর রক্তাক্ত মৃত অবস্থায় খাটের উপর পড়ে থাকতে দেখে এবং রুমের ভেতরে আলমারীর ড্রয়ার খোলা ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এলোমেলো পড়ে আছে। গত ইং-১৯/০৭/২০২৫ তারিখ রাত্র আনুমানিক ১০.৫৯ ঘটিকা হতে ইং ২০/০৭/২০২৫ তারিখ দুপুর আনুমানিক ১২.৩০ ঘটিকার মধ্যে যেকোন সময় অজ্ঞাতনামা আসামীরা একই উদ্দেশ্যে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাদীর পিতা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামকে হত্যা করে। পরবর্তীতে জিএমপি কোনাবাড়ী থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাজীপুর মর্গে প্রেরন করেন। পরবর্তীতে এই সংক্রান্তে ডিসিস্টের ছেলে রাতুল আহাম্মেদ বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করলে জিএমপি কোনাবাড়ী থানার মামলা নং-১৪, তারিখ-২০/০৭/২০২৫ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়। মামলাটি রুজু হওয়ার পর কোনাবাড়ী থানা পুলিশ গত ২০/০৭/২০২৫ তারিখ ০২ দিন মামলাটি তদন্তকালীন সময়ে মামলাটি পিবিআই এর সিডিউল ভূক্ত মামলা হওয়ায় আবেদনের প্রেক্ষিতে অত্র মামলাটি পিবিআই গাজীপুর জেলা অধিগ্রহন করেন। অ্যাডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেল পিবিআই জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল মহোদয়ের সঠিক তত্ত¡াবধানে ও জনাব মোঃ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার পিবিআই গাজীপুর মহোদয়ের দিক নির্দেশনায় মামলাটি উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ), সনজিৎ বিশ্বাস, বিপি-৯৩২০২২৬২১৭ তদন্ত করেন। গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় ডিসিস্টের সাথে শারীরিক সম্পর্ক শেষে তাদের কথামত ৫০০০/-টাকা চাইলে ডিসিস্ট টাকা না দিয়ে মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও ধারন করে ভাইরাল করার ভয় দেখায়। ফলে আসামীদ্বয় সংক্ষুব্ধ হয়ে ২নং আসামী মোঃ আল আমিন এর সঙ্গে আনা চাকু দিয়ে ডিসিস্ট এর গলা ও উরুতে আঘাত করতঃ হত্যা করে ডিসিস্টের ঘরে থাকা মাটির ব্যাংকে ৭৭০/- টাকা, মানি ব্যাগে থাকা ১০০০/-টাকা ও ডিসিস্টের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি নিয়ে পালিয়ে যায়। আসামীদ্বয় পালিয়ে যাওয়ার সময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু ও ডিসিস্টের মোবাইল ফোন কড্ডা ব্রীজের কাছে বাস থেকে ফেলে দেয়। পুলিশ সুপারের বক্তব্যঃ এ বিষয়ে পিবিআই পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন যে এটি একটি নৃশংস হত্যাকান্ড। ডিসিস্ট মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম গাজীপুর ফিডস ‘লিমিটেড এর সিনিয়র ম্যানেজার পদে চাকুরী করে। ঘটনার দিন মামলার ঘটনায় জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত আসামীদ্বয়কে দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য ৫,০০০/-টাকায় ভাড়া করে ডিসিস্টের বাসায় ডেকে আনে। শারীরিক সম্পর্ক শেষে আসামীদ্বয় ডিসিস্ট এর কাছে টাকা চাইলে ডিসিস্ট টাকা না দিয়ে গোপনে মোবাইলের মাধ্যমে ধারন করা ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখায়। একপর্যায়ে আসামীদ্বয় চাকু দিয়ে ডিসিস্ট এর গলা ও উরুতে আঘাত করতঃ হত্যা করে ডিসিস্টের মোবাইল ফোন, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু মাটির ব্যাংক ও মানিব্যাগে থাকা মোট ১৭৭০/- টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। আসামীদ্বয় পালিয়ে যাওয়ার সময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু ও ডিসিস্টের মোবাইল ফোন কড্ডা ব্রীজের কাছে বাস থেকে ফেলে দেয়। অদ্য ইং ২২/০৭/২০২৫ খ্রিঃ তারিখ বিকালে গ্রেফতারকৃত আসামী ১। মোঃ নয়ন (২১) ও ২। মোঃ আল আমিন (১৯) দ্বয় অত্র মামলার ঘটনায় ডিসিস্টকে নৃশংস হত্যার দায় স্বীকার করে নিজেকে জড়িয়ে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান আছে