এসকে এম হুমায়ুন,বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ বেড সংকুলান না হওয়ায় শিশুদের বারান্দায় সেবা প্রদান।
বাগেরহাটে গত চার দিনের শৈত্যপ্রবাহে জন জীবন এক প্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। সারা দিনে সূর্যের দেখা নেই। শ্রমজীবী মানুষরা হয়ে পড়েছেন কর্মহীন। অতিরিক্ত শীতের কারণে হাসপাতালে বাড়ছে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ নানা রোগীর সংখ্যা।
বাগেরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ রাজিয়া নাসের জেলা হাসপাতালে দেখা যায়, শৈত্য প্রবাহের শেষ পাঁচ দিনে ঠাণ্ডাজনিত রোগ বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় প্রায় অর্ধশতাধিক রোগী ভর্তি রয়েছে। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বেডে সংকুলান না হওয়ায় বারান্দায় শিশুদের রেখে সেবা দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ শিশু ওয়ার্ডে বেডের সংখ্যা কম এবং সেখানে শিশু বাদে অন্যান্য রোগীদের রেখে সেবা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলার যাত্রপুর এলাকা থেকে আসা আলিফ হোসনের (৪) মা ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার বাচ্চার সর্দি, কাশি, জ্বর নিয়ে সাতদিন আগে ভর্তি হয়েছি। এখন পর্যন্ত আমার বাচ্চা সুস্থ হয়নি। ডাক্তার বলেছে আরও কিছুদিন থাকতে হবে।
১৫ মাস বয়সী শিশু ইয়াসিনের মা সুমি আক্তার বলেন, ‘আমার বাচ্চাকে গত বুধবার এই হাসপাতালে ভর্তি করাই। ডাক্তার দেখানোর পরে ডাক্তার জানায় আমার বাচ্চার নিউমোনিয়া হয়েছে, বুকের ডান পাশে কফ জমেছে। অতিরিক্ত ঠাণ্ডার কারণে এমন হয়েছে বলে ডাক্তার বলেছে। এখনও আরও চার-পাঁচ দিন থাকতে হবে বলে জানিয়েছে ডাক্তার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগেরহাট ২৫০ বেড শেখ রাজিয়া নাসের জেলা হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ খান শিহান মাহমুদ বলেন, ‘গত কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। আর এই রোগীদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি। শিশু ওয়ার্ডের বেড সংকুলান না হওয়ায় বারান্দায় রেখে সেবা দিতে হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬ জন শিশু ভর্তি হয়েছে তাদের সবারই নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে ভুগছে। আমরা আশা করছি দুই চার দিন পরে শৈত্য প্রবাহ কমলে রোগীর সংখ্যাও কমে যাবে।
শেখ রাজিয়া নাসের জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসিম কুমার সমদ্দার বলেন, ‘গত কয়েকদিনের অতিরিক্ত ঠাণ্ডার কারণে ঠাণ্ডাজনিত রোগ নিয়ে অনেকে ভর্তি হয়েছেন। আমাদের শিশু ওয়ার্ডের ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে। শীতজনিত রোগীর সংখা চিন্তা করে খুব তাড়াতাড়ি শিশু ওয়ার্ডের বেড সংখ্যা বাড়ানো হবে। আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। তবে যে জনবল আছে তা দিয়ে আমরা সর্বোত্তম সেবা প্রদান করে যাব, যেন সাধারন রোগীদের কোনো সমস্যা না হয়।