মোঃ রেজাউল করিম, ঈদগাঁও, কক্সবাজার: বিদেশ প্রত্যাগত কর্মীদের এককালীন আর্থিক প্রণোদনা প্রদান ও তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের কল্যাণে কাজ করছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। অভিবাসী অধ্যুষিত ত্রিশটি জেলায় স্থাপন করা হয়েছে ওয়েলফেয়ার সেন্টার। এ প্রকল্পের কার্যক্রম অবহিতকরণ বিষয়ক এক ওরিয়েন্টেশন গতকাল ঈদগাঁওতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও অনানুষ্ঠানিক খাতের কর্মসংস্থানের পুনরুদ্ধার এবং অগ্রগতিঃ ফেরত আসা অভিবাসীদের পুনঃ একত্রীকরণ (রেইজ) শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সৌরেন্দ্র নাথ সাহা।
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ওয়েজ আরনার্স কল্যাণ বোর্ডের ওয়েলফেয়ার সেন্টার, কক্সবাজার। ঈদগাহ জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের উপজেলা প্রশাসনের অস্থায়ী সম্মেলন কক্ষে এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ঈদগাঁও, সুবল চাকমা। এতে বক্তব্য দেন ইসলামাবাদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ নুর সিদ্দিক, ঈদগাহ জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন, আইওএম প্রতিনিধি শুভ প্রকাশ দে এবং অভিবাসী প্রত্যাশী আজিম উদ্দিন।
অবহিতকরণ সভায় বলা হয়, জীবিকার তাগিদে বর্তমানে বিশ্বের ১৭৮ টি দেশে প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষের অধিক বাংলাদেশী কর্মী কর্মরত আছেন। যে সকল প্রত্যাগত কর্মী পুনরায় বিদেশে যেতে পারেননি তারা দেশে কর্মহীন অবস্থায় রয়েছেন এবং পরিবার পরিজন নিয়ে সমাজে নানা ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
আবার অনেকেই মানবেত জীবন যাপন করছেন। এসব সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ ও নির্দেশনায় বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ সহায়তায় এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। যা বাস্তবায়ন করছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের প্রধান পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে আইওএম বাংলাদেশ । এছাড়া সাতটি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করছেন।
বক্তারা আরো বলেন, “প্রত্যাগত অভিবাসী ফিরে এলেও পাশে আছি” এ স্লোগানকে সামনে রেখে ওয়েলফেয়ার সেন্টারের মাধ্যমে প্রত্যাগত কর্মীদের পুনঃ একত্রীকরণ তথা আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে তাদের নিবন্ধন ভুক্তকরণ এবং কাউন্সিলিং প্রদান পূর্বক ২ লক্ষ প্রত্যাগত কর্মীর ডাটাবেজ প্রস্তুত করে প্রত্যেককে এককালীন সাড়ে ১৩ হাজার টাকা কর্মীর ব্যাংক হিসেবে প্রণোদনা দেয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এছাড়া রেফারেল সার্ভিসের আওতায় কর্মীর চাহিদানুযায়ী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রদত্ত প্রশিক্ষণ /আর্থিক কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্তি অথবা ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তিতে সহযোগিতার মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের সহায়তা করা হবে।
এ বিশাল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ঐকান্তিক সহযোগিতা একান্ত।
অনুষ্ঠানে দেশের অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখার অন্যতম চালিকাশক্তি রেমিটেন্স আহরণকারী বিদেশ প্রত্যাগত কর্মীদের জন্য গৃহীত পুনঃ একত্রীকরণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য উপস্থিত সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করা হয়। এর ফলে প্রবাস ফেরত কর্মীগণ প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
ওরিয়েন্টেশনে উপজেলা প্রশাসনের অন্যান্য অফিসের প্রতিনিধি, মিডিয়া কর্মী, রাজনৈতিক ব্যক্তি, প্রত্যাগত প্রবাসী কর্মী সহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন।