স্বপন কুমার রায় খুলনা ব্যুরো প্রধান বাঙালি হিন্দুদের প্রাণের উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। সারা বছরই যার অপেক্ষা লেগে থাকে। দুর্গাপূজার সময় যত এগিয়ে আসে, তত বাড়ে উন্মাদনা। এরপর পূজার কয়েকটি দিন আনন্দ ও আবেগে ভাসে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। যে যার সাধ্যমতো নতুন পোশাকে সেজে আবাহন জানান দেবী দুর্গার।সনাতন ধর্মালম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দুর্গা পূজার আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। প্রতিমা তৈরিতে মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ততায় জানান দিচ্ছে দেবী দূর্গার আগমনী বার্তা। সারা দেশের মতো খুলনার দাকোপে চলতি বছর ৮৪টি পূজা মণ্ডপে শারদীয়া দুর্গা পূজা উদযাপনে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এদিকে দুর্গোৎসব উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবম্বীদের মধ্যে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। সরেজমিনে দাকোপ, উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে স্থায়ী ও অস্থায়ী এসব সার্বজনীন পূজা মণ্ডপ তৈরি করে পূজার প্রস্তুতি চলছে। প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। ইতিমধ্যে শিল্পীদের দক্ষ হাতের ছোঁয়ায় পূর্ণরূপে ফুটে উঠেছে দৃষ্টিনন্দন অধিকাংশ প্রতিমা। মৃতশিল্পীদের কল্পনায় দেবী দুর্গার অনিন্দ্য সুন্দর রূপ দিতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে মাটির কাজ। কয়েকটি মণ্ডপে আবার মৃতশিল্পীরা শুরু করেছেন রং, তুলি দিয়ে প্রতিমা সাজসজ্জার কাজ। এতে তাদের নিখুঁত হাতের ছোঁয়ায় কৃত্রিম জীবন পাবেন দেবী দুর্গা, শিব, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুরসহ অন্যান্য প্রতিমা। এছাড়া কোনো কোনো প্রতিমায় আবার পরানো হচ্ছে শাড়ি, হাতের বালাসহ অন্যান্য গয়না। এরপর ঢাকের বাজনা, উলুধ্বনি আর আরতিতে মুখরিত হয়ে উঠবে পূজা মণ্ডপগুলো। পাশাপাশি আলোক সজ্জা, প্যান্ডেল তৈরি, মণ্ডপ ও তার আশপাশে সাজসজ্জার কাজসহ নানা কাজেও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন পূজার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি অন্যরাও পূজার কেনাকাটা করতে শুরু করেছেন। হিন্দু ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে হিমালয়ের কন্যা পার্বতী প্রতি বছরে একবার তিন দিনের জন্য নিজের বাবা-মায়ের কাছে আসেন। তাঁর সঙ্গে থাকেন চার সন্তান লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশ। দেবী দুর্গা এই সময় যেন হয়ে ওঠেন বাঙালির ঘরের মেয়ে। এ সময় দেবী দুর্গাকে স্বাগত জানাতে সেজে ওঠে ধনীর অট্টালিকা থেকে গরীবের কুঁড়েঘর। এবার দেবী দুর্গা আসছেন “ঘোটক” অর্থাৎ ঘোড়ায়। যার ফল হবে ছত্রভঙ্গ। অর্থাৎ শাস্ত্র বলছে, এর জেরে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সামরিক অস্থিরতা বেড়ে যাবে। শুধু তাই নয়, মা দুর্গা ফিরবেনও “ঘোটক” বা ঘোড়াতে চড়েই। মূলত বাংলা সনের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত চলে এই দুর্গাপূজা। যা এবছর ২০ অক্টোবর হতে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত পালিত হবে। মহাষষ্ঠী পালিত হবে ২০ অক্টোবর শুক্রবার। মহাঅষ্টমী ২২ অক্টোবর রবিবার। মহানবমী পালিত হবে ২৩ অক্টোবর সোমবার। বিজয়া দশমী পালিত হবে ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার।